অ্যালকোহল দুঃখবোধ বাড়ায়
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
শেষ পর্যন্ত দেবদাসের কিন্তু মরণই হয়েছিল। তাই অবসাদ, বিষণœতা কিংবা হতাশা থেকে উদ্ধার পেতে মদ্যপান কোনো উপকারেই আসে না বরং ক্ষতির পরিমাণ বেশি।
আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের মতে প্রতি ১৫ জনের মধ্যে একজন হতাশায় ভুগছেন। যে কোনো পরিস্থিতেই এই মানসিক রোগ দেখা দিতে পারে। আর এটা বেশি দেখা দেয় কৈশরের শেষে কিংবা বয়স ২০ হওয়ার পর।
আর পুরুষের চাইতে নারীদের হতাশায় ভোগার ঝুঁকি বেশি।
এই হতাশা থেকেই আসে নেশার হাতছানি, যার একটি বড় অংশ জুড়ে আছে মদ্যপান। আর শুধু মদ্যপানই নয় হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় স্বাস্থ্যকর খাবারও বেশি খাওয়া পড়লে শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা মোকাবেলা করা কঠিন।
চিকিৎসা-বিজ্ঞানের তথ্যানুসারে, “হতাশাগ্রস্তদের সাময়িক মুক্তি দিতে পারে ‘অ্যালকোহল’। উচ্চমাত্রার ‘অ্যালকোহল’যুক্ত পানীয় পান করলে মস্তিষ্কের ‘নিউরোট্রান্সমিটার’ উত্তেজিত হওয়ায় সাময়িক ভালোলাগার অনুভূতি তৈরি করে, ভুলিয়ে দেয় নেতিবাচক কিংবা মানসিক যন্ত্রণাদায়ক অনুভূতি। আবার ‘অ্যালকোহল’ শরীরকে ক্লান্ত করে দিয়ে অনিদ্রার সঙ্গে মোকাবেলা করতেও সাহায্য করে।”
শরীরকে শিথিল ও অসাড় করে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ‘অ্যাহকোহল’য়ের, যা মানসিক চাপ দূর করতে সহায়ক। তবে সেটা যকৃতের জন্য যতটা হানিকর, মস্তিষ্কের জন্য তার চাইতে কয়েকগুণ বেশি ক্ষতিকর।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অন অ্যালকোহল অ্যাবিউজ অ্যান্ড অ্যালকোহলিজম (এনআইএএএ)’র মতে অ্যালকোহলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে বিষণœতা দেখা দেয় ও মাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে অ্যালকোহল গ্রহণের পরিমাণও বাড়াতে থাকে সেই হারে।
তারা এই প্রক্রিয়ার নাম দিয়েছে ‘অ্যালকোহল অ্যাবিউজ’ বা মদের অপব্যবহার।
‘অ্যাডিকশন’ জার্নালে প্রকাশিত নিউ জিল্যান্ডের ‘ইউনিভার্সিটি অফ ওটাগো’র গবেষকদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে- মানসিক বিশৃঙ্খলা ও বিষণ্ণতা মোকাবিলা করতে গিয়ে অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে অন্যান্য সমস্যা তৈরির হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুন বাড়িয়ে দেয়।
এর মধ্যে আছে ‘সাইকোসিস’ বা চরম মনোবৈকল্য, ‘হ্যালুসিনেইশন’ বা দৃষ্টিভ্রম, স্মৃতিশক্তি লোপ, ‘ডিমেনসিয়া’ বা স্মৃতিভ্রংশ হওয়ার মতো মারাত্বক মানসিক রোগ।
আরও ভয়ানক বিষয় হল, হতাশাগ্রস্ততায় চিকিৎসায় ব্যবহার হয় এমন ওষুধের সঙ্গে যখন ‘অ্যালকোহল’ মিশ্রিত হয়।
‘অ্যালকোহল’য়ের সঙ্গে মিশলে এই ওষুধগুলো ঠিকভাবে কাজ করে না। বরং রোগীকে আরও বেশি হতাশগ্রস্ত করে তোলার পাশাপাশি ‘অ্যালকোহল’য়ে অতিরিক্ত আসক্ত করে ফেলার ঝুঁকিতে ফেলে দেয়।
তাই দেবদাস হয়ে মদ্যপান নয় বরং সুস্থ থাকতে ও হতাশা কাটাতে নিচের লিংকগুলো ক্লিক করে জেনে নিন কী করতে হবে।